বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০১৬

গল্পের ফেরিওলা

তিনটি শহরে আমি নারী বন্দনা গেয়েছি ,
কিন্তু ও সব যেন ঘুরেফিরে একই রকম ;
তাই এখন আমি রৌদ্রের গান গাইবো ।

ঠোঁটে করে নিয়ে শব্দের সাথে খেলা হয় তোমার ,
স্বপ্ন , শব্দ - যেন কোন রত্নের মতন ,
প্রাচীন কোন দেবতার অদ্ভুত উচ্চারিত মন্ত্র ,
রাত, কাক কিংবা কোন প্রলুব্ধি নয় ;
আমার এ গানের প্রাণ বরং অন্য কিছুতে ।

সেইসব নারীদের চোখ , স্বপ্ন , ঠোঁট ;
কিন্তু রাত ফুরোবার সাথে সাথে
তাদের কোন স্মৃতিই আমার পথে সঙ্গী হয় না ।
তাদের শরীরে , আমাদের মিলন বিস্মৃতিতে
একটিবারের জন্যে হলেও টুকরো স্মৃতিগুলো
বাতাসে ভেসে আসে , দীর্ঘশ্বাসে বলে , " তুমি ,
তোমার ভাঁজ পড়া চোখ ,
উচ্চকিত হাসি ,
অমন সাহস ( বিদ্রুপিত ) ,
তোমার মতন আরও অনেকের মধ্যে কঠিন তুমি , ঠুনকো তুমি ,
রৌদ্রে বীণা হাতে সেই পুরোনো পথে হেঁটে বেড়ানো তুমি , রইতে ?
রইতে তুমি এইখানে ? "

বছরের কোন ক্বদাচিত দিনে গল্পের ফেরিওলাকে নিয়ে
তাদের নিজেদের মধ্যে কথা হয় :

" গল্পের ফেরিওলা ? " " ও সেই বাগদিয়া বাসী ,
সেই গানওলার কথা বলছ ? "
" হ্যাঁ সেইই , একদিন আমাদের এই পথে গিয়েছিল , "
" ও সেই রসিক যুবকটি "
" কিন্তু আসলে তো সে এইসব ভবঘুরেদেরই একজন , "
" ওগুলো সত্যিই তার নিজের লেখা গান ?
নাকি অন্য কারুর যেগুলো সে প্রায়ই গেয়ে থাকে ? "
" কিন্তু তাই বলে সে সত্যিই তোমাদের শহরেও এসেছিলো , বলছ ? "

" জানি না , ঈশ্বরের ইচ্ছা , হয়ত বা ,
কিন্তু তোমাকে যা বলছি ওর গোপন কথা সেসব যদি প্রকাশ করো
তবে তুমিও ওর মতনই নিঃস্ব হবে - বলে রাখলাম । "

তিনটি শহরে আমি নারী বন্দনা গেয়েছি ।
কিন্তু সেইসব প্রশংসা কথা ঘুরেফিরে একই ।
তাই আমি আজ রৌদ্রের গান গাইবো ।
... উহ ? ... সেই নারীদের প্রায় সবারই চোখ ছিল ধূসর ,
যেন একই রকম , আমি তাই রৌদ্রের গান গাইবো ।

হে সূর্য পুরুষ , পথের-গানে , হাসিতে ,
মেঘে আর বৃষ্টিতে আমার পথ ভরে উঠুক ।
রৌদ্র-কাননে যাবার সে হোক আমার নতুন পথ !

তিনটি শহরে আমি নারী বন্দনা গেয়েছি
সেসব বন্দনা ছিল একই রকম ।

আমি তাই স্বর্গের নীলাভে পাখিদের গান গাইবো ,
সমুদ্র থেকে ঝড়ে পড়া মেঘেদের গান ।

মূল লেখাঃ Cino
Written By: Ezra Pound

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন