বুধবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১৬

ছড়া

পানকৌড়ি আর শিকারীর তাড়ানো মুহূর্ত থেকে আসি , 
হঠাতই আসি 
নিশিন্দা-গুচ্ছে  জোনাকের মতন জ্বলি , 
তারপর উপত্যকা থেকেই ঝড়ে পড়ি । 

ত্রিশ পাহাড় পেরিয়ে আসি , 
কিংবা শৈলতেই  হারিয়ে পড়ি , 
কুড়ি গাঁও বাদে , একটি ছোট্ট শহর , 
আর আধা শতক সাঁকো । 

শেষ পর্যন্ত যেখানে ওর মাঠের ধারে বয়ে চলি 
উদ্বেল নদের সঙ্গিনী হতে ,
যদিওবা সে আসে এবং যেতেও পারে চলে , 
তবু আমি যাই বয়ে । 

এখন পাথরের সাথেই বাজে বকি , 
ধারে আর ত্রিগুণে , 
ঘূর্ণায়ু সমুদ্রে ডুবে মরি , 
আর নুড়িপাথরের সাথ বকবক করি । 

অনেক ঢেউয়ে আমার পাড়ে আমি ক্ষয়ে যাই 
বহু মাঠে আর অনাবাদী জমিতে , 
আর বহু আকাঙ্ক্ষিত অন্তরীপে
শেষাবধি আগাছাই জেগে রয় । 

তাই আজ বয়ে যাই আর কল্লোল করে বাজে বকে যাই ,
উদ্বেল নদের সঙ্গিনী হতে ,
যদিওবা সে আসে এবং যেতেও পারে চলে , 
তবু আমি যাই বয়ে । 

বাতাসের মতই বয়ে যাই , ভেতরে ও বাহিরে , 
এখানের প্রসূত জলযাত্রায় , 
হয়ত বা এক ঝাঁক কইয়ের দল । 

মাঝে আমার শরীরে বিন্দু বিন্দু জলকণা 
যখন আমি পাথরের উপর ঢেউয়ের মতন ভেঙ্গে যাই , 
আর সেই ভেঙ্গে পড়া জলকণাদের সাথে করে চলি  
উদ্বেল নদের সঙ্গিনী হতে ,
যদিওবা সে আসে এবং যেতেও পারে চলে , 
তবু আমি যাই বয়ে । 

ঘাসের ফুলে লুকিয়ে ,
পিপুলের পাতায় আড়াল করে ,
তুলে নিলাম কয়েকটি নীল শেরামণি বা জোনাক ফুল  
যা জন্মেছিল সুখী প্রেমিকদের জন্য । 

আমি আছড়ে পড়ি , ভেঙ্গে পড়ি , বিদগ্ধ হতাশায় তাকিয়ে রই , 
আমার বাহিরে , 
তবু দুহাতে মুঠি মুঠি রৌদ্র বুলিয়ে দিই  
আমার এসমস্ত ক্ষতে । 

এক অদ্ভুত অস্থিরতায় জেগে রাতের নক্ষত্রদের সাথে কথা কই ,
নিজের ভেতরে রাত বাড়ে , 
আর সময়দের সাথে বাড়ে দূরত্ব ।

এবং আবারও আমাদের চিহ্ন এঁকে বয়ে চলি , 
উদ্বেল নদের সঙ্গিনী হতে ,
যদিওবা সে আসে এবং যেতেও পারে চলে , 
তবু আমি যাই বয়ে । 


ভাবানুবাদঃ মূল কবিতাঃ দ্য ব্রুক - আলফ্রেড লর্ড টেনিসন 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন