পানকৌড়ি আর শিকারীর তাড়ানো মুহূর্ত থেকে আসি ,
হঠাতই আসি
নিশিন্দা-গুচ্ছে জোনাকের মতন জ্বলি ,
তারপর উপত্যকা থেকেই ঝড়ে পড়ি ।
ত্রিশ পাহাড় পেরিয়ে আসি ,
কিংবা শৈলতেই হারিয়ে পড়ি ,
কুড়ি গাঁও বাদে , একটি ছোট্ট শহর ,
আর আধা শতক সাঁকো ।
শেষ পর্যন্ত যেখানে ওর মাঠের ধারে বয়ে চলি
উদ্বেল নদের সঙ্গিনী হতে ,
যদিওবা সে আসে এবং যেতেও পারে চলে ,
তবু আমি যাই বয়ে ।
এখন পাথরের সাথেই বাজে বকি ,
ধারে আর ত্রিগুণে ,
ঘূর্ণায়ু সমুদ্রে ডুবে মরি ,
আর নুড়িপাথরের সাথ বকবক করি ।
অনেক ঢেউয়ে আমার পাড়ে আমি ক্ষয়ে যাই
বহু মাঠে আর অনাবাদী জমিতে ,
আর বহু আকাঙ্ক্ষিত অন্তরীপে
শেষাবধি আগাছাই জেগে রয় ।
তাই আজ বয়ে যাই আর কল্লোল করে বাজে বকে যাই ,
উদ্বেল নদের সঙ্গিনী হতে ,
যদিওবা সে আসে এবং যেতেও পারে চলে ,
তবু আমি যাই বয়ে ।
বাতাসের মতই বয়ে যাই , ভেতরে ও বাহিরে ,
এখানের প্রসূত জলযাত্রায় ,
হয়ত বা এক ঝাঁক কইয়ের দল ।
মাঝে আমার শরীরে বিন্দু বিন্দু জলকণা
যখন আমি পাথরের উপর ঢেউয়ের মতন ভেঙ্গে যাই ,
আর সেই ভেঙ্গে পড়া জলকণাদের সাথে করে চলি
উদ্বেল নদের সঙ্গিনী হতে ,
যদিওবা সে আসে এবং যেতেও পারে চলে ,
তবু আমি যাই বয়ে ।
ঘাসের ফুলে লুকিয়ে ,
পিপুলের পাতায় আড়াল করে ,
তুলে নিলাম কয়েকটি নীল শেরামণি বা জোনাক ফুল
যা জন্মেছিল সুখী প্রেমিকদের জন্য ।
আমি আছড়ে পড়ি , ভেঙ্গে পড়ি , বিদগ্ধ হতাশায় তাকিয়ে রই ,
আমার বাহিরে ,
তবু দুহাতে মুঠি মুঠি রৌদ্র বুলিয়ে দিই
আমার এসমস্ত ক্ষতে ।
এক অদ্ভুত অস্থিরতায় জেগে রাতের নক্ষত্রদের সাথে কথা কই ,
নিজের ভেতরে রাত বাড়ে ,
আর সময়দের সাথে বাড়ে দূরত্ব ।
এবং আবারও আমাদের চিহ্ন এঁকে বয়ে চলি ,
উদ্বেল নদের সঙ্গিনী হতে ,
যদিওবা সে আসে এবং যেতেও পারে চলে ,
তবু আমি যাই বয়ে ।
ভাবানুবাদঃ মূল কবিতাঃ দ্য ব্রুক - আলফ্রেড লর্ড টেনিসন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন