বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৩

প্রতীক্ষা



আমার নিঃশ্বাসটুকু আটকে ছিল এগারটা বাইশ আর তেইশের মাঝখানে ,
ওর ছোট্ট ''না'' টুকুও ততখানি উপেক্ষিত ৬০ সেকেন্ডে আঘাত হানল
আমার ভিতরে ।
লাকসাম রেইলওয়ে জংশন , আমি বসে আছি আমাকে নিয়ে ,
বসিয়ে রেখেছি তাকে ঘিরে আমার সমস্ত অখণ্ড খণ্ডিত আলাপন আর
কল্পবিলাসিতাকে ।
লাইনম্যানের সবুজ পতাকা আর আমার বুকের ভিতরে ক্ষয়ে যাওয়া
লাল গোলাপের কাঁটার বিদ্ধতায় জমে থাকা কালচে রক্ত ,
আমার বুকের ভেতরের লাল তার শ্বেত ক্যামেলিয়াকে
কি কখনই রাঙ্গায়নি ?
ভোর রাতে শুকতারার আলোয় পৃথিবীর প্রথম দুটি পাখির
আকাশে উড়ে যাওয়া আর ডানা মেলে দেওয়া মুক্তবিহংগের
অবোধ আলাপে আমার প্রতিক্ষণে হারিয়ে যাওয়া,
এসবই কি নিমেষ মাত্র ?
সকাল আটটায় লোকাল বাসে অফিসগামীদের উপচে পড়া ভিড়ে
আমি ক্রমাগত কক্ষচ্যুত হয়ে পড়ি আর হারিয়ে যাই ভিড়ের তলে ,
যদিও কেউ খুঁজে নেয় না , তবু হঠাত করেই সস্তা কাজের ভিড়ে
যখন বেজে উঠে সেলফোনের টুংটাং , আমি আরও একবার হারাই
বিগত হাসি-কান্না , হীরা-পান্নার উপাখ্যানে ।
প্রখর ঝলসানো রৌদ্রে ট্র্যাফিক জ্যামে ঘামের কড়াইতে ভেজে উঠা ,
আমার পিঠে ওদের লাগাম ছাড়া ছুটোছুটি আর মেঝেয় শত
আনন্দিত কলরবের লুটোপুটি ।
বিষণ্ণ নীলচে গোধূলির আঁধার যখন মাথার উপর চাঁদোয়া মেলে ধরে
আর রাত দুপুরের আবদার যখন একে একে হাতছানি দিয়ে উকি দেয়
মনের দৃশ্যপটে তখন আমি আমাকে বিছিয়ে দিই বেলাভূমিতে ,
নুড়িপাথর আর নোনা জলের কলরবে , আবছায়া কালো প্রতীক্ষায় ...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন